ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, দেশে কোন আইনের শাসন নাই । ফ্যাসিবাদী সরকার তাদের ইচ্ছামত রায় প্রদানে বিচারকদের বাধ্য করছে । তারা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে । সুপ্রিম কোর্টের আদেশ লঙ্ঘন করে শাহজাহান চৌধুরীকে ( সাবেক এমপি) মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো আওয়ামী দু:শাসনের নিকৃষ্টতম নজির। তিনি বলেছেন, আমাদের দেশটি অনেক সম্ভাবনাময়ী একটি দেশ। দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে ভৌগোলিক-অর্থনৈতিক উভয় দিক থেকে আরও অনেক বেশি সম্ভাবনাময়ী হয়ে উঠছে। যার কারণে এ দেশ আজকে পরাশক্তির টার্গেটে পড়ে গেছে। এই সময়ে আমাদের দেশ গতিপথ হারিয়েছে। স্বাধীনতার চেতনা থেকে বিচ্যুত হয়েছে, গণতন্ত্রের চেতনা থেকে বিচ্যুত হয়েছে, ইসলামের মূল্যবোধের চেতনা থেকে বিচ্যুত হয়েছে, মানবাধিকার থেকে বিচ্যুত হয়েছে। এইভাবে আমাদের বাংলাদেশ যেদিকে হাঁটার কথা ছিল এখন ঠিক তার উল্টো দিকে হাঁটছে। এই উল্টো দিকে বাংলাদেশকে আর আমরা হাঁটতে দিতে পারি না। কেননা যেদিকে বাংলাদেশ হাঁটা শুরু করেছে এই সরকারের সেই জঘণ্য ভূমিকার কারণে দেশের ভবিষ্যত কল্পনার চেয়ে বেশি অন্ধকার এবং ভয়াবহ।
তিনি বলেন, অতীতে আওয়ামী সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। আওয়ামী সরকার জনগণের ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতাসহ সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছে। বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই। জনমত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। তাই তারা কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। সৎ, যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য, কেয়ারটেকার সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আইনজীবীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
মহানগরীর আমীর মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ন্যায়-ইনসাফ তথা ইসলাম থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণেই সবখানে আজ সাধারণ মানুষ জুলুমের শিকার হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। সমাজের মজলুম মানুষকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। মানুষ যাতে ন্যায়বিচার পায় সেজন্য পূর্ণ পেশাদারিত্বের সাথে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে। এছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এই সরকারের মনে রাখা উচিত এটি ২০১৪ বা ২০১৮ নয়। এবার যে নির্বাচন হবে তা কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের জন্যে দেশের সর্বস্তরের মানুষ সোচ্চার। সবকিছুকে উপেক্ষা করে, নির্যাতন চালিয়ে, দিনের ভোট আবার রাতে করে অথবা ভোটারবিহীনভাবে সংসদ গমন করার যে স্বপ্ন তারা দেখছে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবে না, ইনশাআল্লাহ। যত কোরবানি প্রয়োজন, এ দেশের ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা সেই কোরবানি দিয়ে হলেও এ দেশকে স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্ত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রতিদিন নির্যাতনের মাঝে, প্রতিদিন গ্রেফতারের মাঝে, প্রতিদিন মিথ্যা মামলার মাঝেও ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের সংগ্রাম থেমে নেই। আমাদের সংগ্রাম আরও দুর্বার হবে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, এ দেশের ইসলামী আন্দোলনের প্রতি গণমানুষের ভালোবাসার যে জোয়ার তৈরি হচ্ছে এ জোয়ারের মাঝে সময়ের ব্যবধানে সবকিছু ভেসে গিয়ে সত্যের সাক্ষ্য স্থাপিত হবে। বাংলার জমিনে ইসলামের বিজয়ের পতাকা উড়বে, ইনশাআল্লাহ। আমরা সেই প্রত্যাশায় সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
চট্টগ্রাম মহানগরী আইনজীবী থানার উদ্যোগে থানা আমীর এডভোকেট এতেসামুলহকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন নগর সহকারী সেক্রেটারি মোরশেদুলইসলাম চৌধুরীসহ আইনজীবি থানা নেতৃবৃন্দ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
মন্তব্য করুন