ছবি: সংগৃহীত
সুদানের দারফুরের উত্তরাঞ্চলে জামজাম এবং আবু শোরুক অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ক্যাম্প ও এল-ফাশের শহরে আধাসামরিক বাহিনী ও তাদের মিত্রদের হামলায় অন্তত শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ২০ জন শিশু ও ৯ জন ত্রাণকর্মী রয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এই হামলার জন্য র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামের আধাসামরিক বাহিনীকে দায়ী করা হয়েছে। এই গোষ্ঠীটি দুই হাজার দশকের শুরুর দিকে দারফুর গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। জাতিসংঘ এই নতুন হামলাকে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে নিন্দা করেছে।
সুদানে জাতিসংঘের আবাসিক এবং মানবিক সমন্বয়কারী ক্লেমেন্টাইন এনকভেটা-সালামি শনিবার বলেছেন যে আরএসএফ এবং সহযোগী যোদ্ধারা জমজম এবং আবু শোরুক ক্যাম্প এবং উত্তর দারফুর প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানী এল-ফাশারের নিকটবর্তী শহরটিতে আক্রমণ শুরু করে। শুক্র ও শনিবার ক্যাম্পগুলোতে আক্রমণ করা হয় জানিয়ে এনকভেতা-সালামি একটি বিবৃতিতে বলেছেন, জমজম ক্যাম্পে নয়জন ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, জমজম এবং আবু শউকে সাত লাখেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। যারা অতীতের লড়াইয়ের সময় দারফুর জুড়ে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। তিনি বলেন, প্রায় দুই বছর আগে শুরু হওয়া সংঘাতে সুদানে বাস্তুচ্যুত মানুষ এবং সাহায্য কর্মীদের উপর একের পর এক নৃশংস হামলার হচ্ছে। এই হামলা আরেকটি মারাত্মক এবং অগ্রহণযোগ্য সংঘাত বৃদ্ধির অংশ। আমি দৃঢ়ভাবে এই ধরনের কাজ অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
জাতিসংঘের কর্মকর্তা ত্রাণকর্মীদের পরিচয় জানাননি, তবে সুদানের ডক্টরস ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে বলেছে, শুক্রবার জমজমের তাদের হাসপাতালে হামলায় রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের ছয়জন চিকিৎসা কর্মী নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালের চিকিৎসক মাহমুদ বাবের ইদ্রিস এবং ওই অঞ্চলের গ্রুপের প্রধান অ্যাডাম বাবের আবদুল্লাহ রয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিয়ন। এদিকে রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল তার নয়জন শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে শুরু হওয়া সুদানের গৃহযুদ্ধে ইতোমধ্যে ২৪ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়েছে, যা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশেষ করে জামজাম ক্যাম্পসহ বিভিন্ন এলাকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।
ত্রাণ সংস্থাগুলো জরুরি যুদ্ধবিরতি এবং ত্রাণ সরবরাহের জন্য নিরাপদ করিডোর তৈরির আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতের গণহত্যা ঠেকানো যায় এবং সংকটাপন্ন মানুষদের সহায়তা করা যায়।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মন্তব্য করুন