ফাইল ছবি
ঢাকার পুরাতন হাইকোর্ট ভবনে বসানো হয়েছিল ফ্যাসিবাদের ট্রাইব্যুনাল। ক্ষমতাসীন হাসিনার নির্দেশনা আর ভারতীয় হাইকমিশনের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ট্রইব্যুনালের আদেশ আর শাহবাগীদের দাবি অনুসারে ফরমায়েশি রায়ে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালিন আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলি আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, আব্দুল কাদের মোল্লা, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলি, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়। অধ্যাপক গোলাম আযম, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, একেএম ইউসুফ, মাওলানা আব্দুস সুবহানসহ কয়েকজন বন্দি অবস্থায় মারা যান।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মামলা চলছিল ট্রাইব্যুনাল-১ এ। এই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহন এবং রায় প্রদানে ব্যাপক জালিয়াতির আশ্রয় নেয় তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন টিম। তার মধ্যে একজন সাক্ষীর অবস্থা ছিল এই যে, জাতীয় পরিচয়পত্রে তার জন্ম তারিখ রয়েছে ১৯৭৪ সালের একটি তারিখ। সেই সাক্ষী জবানবন্দী দেয়ার পর এখন জেরার পালা।
এটিএম আজহারুল ইসলামের আইনজীবি এডভোকেট মিজানুল ইসলামের প্রশ্ন, আপনার জন্ম ১৯৭৪ সাল । আপনি ১৯৭১ সালের ঘটনা দেখলেন কিভাবে-যখন আপনার জন্মই হয়নি?
সাক্ষী জবাব দিলেন, আমার জন্ম ৭১ সালের আগে, স্কুলের মাস্টাররা জন্ম তারিখ ১৯৭৪ সাল করে দিয়েছে।
উকিলের প্রশ্ন: স্কুলের মাষ্টার কত বছর বয়স কমিয়েছে?
সাক্ষীর আর জবাব নেই।
মামলার শুনানীর সময় মিজানুল ইসলাম আদালতের কাছে প্রশ্ন রাখেন, স্কুলের মাস্টার এসএসসির ফরম ফিল আপের সময় বয়স কত বছর কমিয়ে থাকেন? ১/২ বছর ,বড়জোর চার বছর। তার চেয়ে বেশি কি হতে পারে?১৭/১৮ বছর কি হওয়া সম্ভব? ৪ বছর কমালেও তো ১৯৭১ সালে তার বয়স হতে পারে বড়জোর এক বছর। এক বছরের শিশু কি প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হতে পারে?
মামলার এই শুনানী চলাকালে আমার পাশে বসা ছিলেন একটি টেলিভিশন চ্যানেলের চিফ রিপোর্টার স্নেহাস্পদ সহকর্মী ছোট ভাই। তাকে বললাম, কাহিনীটা কেমন হতে পারে-১৯৭৪ সালে জন্ম নেয়া ব্যক্তি ১৯৭১ সালের ঘটনার প্রতক্ষদর্শী সাক্ষী?
ঐ সাংবাদিকের বর্নিত কাহিনীটা ছিল এই-যার জন্ম হয়নি সে তো ছিল আল্লাহর কাছে। আল্লাহ তো থাকেন সবার উপরে। কাজেই ওই সাক্ষী উপর থেকে সব দেখেছে।
এই হলো- আজহারুল ইসলামের মামলার প্রত্যক্ষদর্শী একজন সাক্ষীর নমুনা।
দূর্ভাগ্যজনক হলেও খুনী হাসিনার ক্যাঙ্গারু কোর্ট তার সাক্ষীও গ্রহন করেছিল।
শহীদুল ইসলাম