• , |
  • ঢাকা, বাংলাদেশ ।
সর্বশেষ নিউজ
* ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা আবহাওয়া অধিদফতরের * নিউইয়র্কে রেস্তোরাঁয় বন্দুক হামলা, নিহত ৩ * দেখামাত্র গুলির নির্দেশ : বার্তা ফাঁসকারী পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার * চট্টগ্রামে দাঁড়িয়ে থাকা পিকআপে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কা, নিহত ৫ * মহাখালীতে সিএনজি ফিলিং স্টেশনে আগুন * আবাসন ভাতা নিশ্চিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ * ৮৩টি আসনের সীমানা পরিবর্তনে আবেদন পড়েছে ১৭৬০টি * ঠিকাদারির টাকা নিতে গিয়ে ঢাবিতে আটক ছাত্রলীগ নেতা * রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করতে পারবে না প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * সিইসির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

রাজনীতির পুরি ও স্বৈরাচারের দোসর

news-details

সংগৃহীত ছবি


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় ঝড়ে পড়া রক্ত এখনো শুকায়নি। হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন অসংখ্য আহত ছাত্র-জনতা। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার মুখে এখনো অনেকে। তাদের কেউ কেউ এরই মধ্যে দুনিয়ার সফর শেষ করেছেন। হাজার হাজার মানুষ বয়ে বেড়াচ্ছেন অভ্যুত্থানের ক্ষত ও পঙ্গুত্ব এমনকি বরণ করেছেন অন্ধত্ব। আর এসবের মূল লক্ষ্যই ছিল রাষ্ট্রের শাসন কাঠামো সংস্কার করা। 

চলতি বছরের ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। গত ৮ আগস্ট সরকার প্রধান হিসেবে শপথ নিয়েছেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূস। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর পর দেশের সবগুলো রাজনৈতিক দল তাদের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি তৎপর হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে নেপথ্যে ভূমিকা পালনকারী রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে জামায়াত ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির বেশ আলোচনায়। বিশেষ করে সমন্বয়কদের মধ্যে শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির পরিচয় প্রকাশের পর আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করতে জাতীয় ঐক্য ও লক্ষ্য অর্জিত হওয়ায় এসব সমালোচনা নেতিবাচকতা ছড়ানোর মিশন ব্যর্থ হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। 

অভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্রযন্ত্রের নানা জায়গায় সংস্কার কার্যক্রম চলমান। ফ্যাসিবাদের দোসরদের এবং জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত বা মদদদাতাদের বিচারের আওতায় আনতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। শেখ হাসিনাসহ ফ্যাসিবাদী ও গণহত্যাকারীরা যারা দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন বা আত্মগোপনে আছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের গ্রেফতার অভিযান, তদন্ত চলছে। এক্ষেত্রে সাংবাদিক ও অন্যান্য পেশার লোক যারা জড়িত তারা কেউ ছাড় পাচ্ছেন না। তবে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে পরিচিত এখনো অনেক শীর্ষ আমলা সাংবাদিক ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছেন। তাদেরকে আইনের আওতায় না আনায় সমালোচনা চলছে। 

অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা করছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ-এমনকি নিজ দলের অনেক সমর্থকও। প্রথম সমালোচনার বিষয়টি হলো- রাজনৈতিক দল হিসেবে জুলুমকারীদের ক্ষমা করে দেওয়া। তবে তিনি উল্লেখ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কেউ বিচার চাইলে তাকে জামায়াত সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। মূলত, প্রতিহিংসাকে পরিহার করার নীতি বাস্তবায়ন করেছেন ডা. শফিকুর। দৃশ্যত, এর মাধ্যমে দল হিসেবে জামায়াত বর্তমান প্রেক্ষাপটে লাভবান হয়েছে। কারণ  দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়গুলোর দায় জামায়াতের ওপর বর্তানোর সুযোগ হারিয়েছে ষড়যন্ত্রকারীরা। 

সবশেষ গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মরহুম রুহুল আমিন গাজীর নামাজে জানাযায় অংশ নেন ডা. শফিকুর রহমান। এদিন প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ডা. শফিকুর রহমানসহ জামায়াত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে গল্প করতে ও পুরি খেতে দেখা যায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদকে। ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সমালোচনাও হয় ব্যাপকহারে। এটি কি আনুষ্ঠানিক না কাকতালীয় তা খোলাসাও করেছেন অনেকে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি শহিদুল ইসলাম এক ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তিনি উল্লেখ করেন চা খেতে জামায়াত নেতারা সেখানে বসেছেন। পরে কাকতালীয়ভাবে সাংবাদিক ইকবাল সোবহান ও আবুল কালাম আজাদ সেখানে আসলে তাদেরকে বসার সুযোগ দেন আমাদের ফোরামের সাংবাদিকরা।

তবে এই ব্যাখার সমালোচনা করেছেন নেটিজেনরা। কারণ ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের জামায়াতের আমির ও সেক্রেটারি জেনারেলের টেবিলে বসার জন্য চেয়ার ছেড়ে দেওয়া ষড়যন্ত্রের অংশ বলেই মনে করেন অনেকে। তবে জামায়াত আমির প্রোটোকল ছাড়া তো কোথাও বসার কথা না বলেও দাবি জামায়াতের কট্টর সমর্থকদের। সমালোচনা থেকে রেহাই পায়নি প্রেস ক্লাব কর্তৃপক্ষও। জামায়াতের ইস্যুতে ফ্যাসিবাদের দোসর সাংবাদিকদের অতীত কর্মকাণ্ড তুলে ধরেছেন অনেকে। 

সামাজিক মাধ্যমের পোস্টগুলোর মন্তব্যের ঘরে খেয়াল করলে দেখা যায়, জামায়াতের আদর্শের প্রতি কারো দ্বিধা নেই। তবে ফ্যাসিবাদের শাস্তির ইস্যুতে কঠোর মনোভাব প্রকাশ করেছেন দেশের সাধারণ মানুষ। শহীদদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে সতর্ক করেছেন অনেকে। জামায়াত আমিরের মহানুভবতা, বদান্যতা ও উদারতা নিয়ে প্রশ্ন না থাকলেও ফ্যাসিবাদীদের বিচার ইস্যুতে আপোষহীন দেশের মানুষ। এসব সমালোচনার আনুষ্ঠানিক জবাব দেয়নি জামায়াত। দলটির সমর্থকরা এহেন পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।


আব্দুল্লাহ জিহাদী

মন্তব্য করুন