ছবি : সংগৃহীত
জ্বালানি সংকটের কারণে ডিজেল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখায় দেশে বিদ্যুৎ সংকট তৈরি হয়েছে। সরকার সারাদেশে চাহিদা পূরণে সিডিউল করে লোডশেডিং দিয়ে পরিস্থিতি শামাল দেয়ার চেষ্টা করছে। তবে সরকারের এ উদ্যোগকে ভবিষ্যতে কঠিন পরিস্থিতি এড়ানোর একটি অগ্রিম পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করছে।
গ্রামীণ ও নগর জীবনের চাহিদা ও অভ্যাসগত অনেক পার্থক্য আছে। লোডশেডিং-এর ক্ষেত্রে উৎপাদনমুখী শিল্প-কারখানা, অফিস আদালত, সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কিংবা আবাসিক বাসা-বাড়ির চাহিদার বিষয়টিও মাথায় রাখার কথা। এর সাথে অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দেশের লাখ লাখ শিশু শিক্ষার্থীর দৈনন্দিন পাঠের অভ্যাস। এখানেই অনেক ক্ষেত্রে ঘটেছে বিপত্তি। গ্রামে শিডিউল হওয়ার আগেও ধারাবাহিক লোডশেডিং হতো অনিশ্চিত সময়ের জন্য। কিন্তু বর্তমানে সন্ধ্যায় যে লোডশেডিং সিডিউল করা হয়েছে তাতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গ্রামের শিশুরা। কারণ অভ্যাসগতভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুরা সন্ধ্যায় পড়তে বসে। আর সেসময়টুকুতেই বিদ্যুৎ না থাকায় তীব্র এ গরমে শিশুরা পড়ার টেবিলে বসছে না। একদিকে করোনাকালে অনেক শিশু পড়ালেখা বিমুখ হয়েছে। আবার করোনা পরবর্তী সময়ে যেটুকু পাঠাভ্যাস হয়েছে, বিদ্যুৎ সমস্যায় তাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে অভিভাবকরা আশঙ্কা করছেন।
অনেক ক্ষেত্রে এমন অভিযোগও
করছেন তারা ১৮ জুলাই থেকে সিডিউল লোডশেডিং দেয়ার আগে গ্রামে ২৪ ঘন্টায় গড়ে ১০-১২ ঘন্টা
বিদ্যুৎ থাকতো। বাকি ১২-১৪ঘন্ট লোডশেডিং হতো,যার কোনো সিডিউল থাকতো না। কিন্তু বর্তমানে এক ঘন্টা করে লোডশেডিং -এর সিডিউল ঘোষণা করা হলেও
বিদ্যুৎ সরবরাহ আগের মতো কোনো কোনো সময় আরো অবণতি হয়। এমনকি অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ
সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষের ঘোষিত সূচী অনুযায়ীও বিদ্যুৎ থাকছে না। এসব নিয়ে সামাজিক সব
মাধ্যম তীর্যক মন্তব্য করছেন ভূক্তভোগীরা। সিডিউল
অনুযায়ী চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশেল অন্যান্য নগরী ও জেলা শহরগুলোতেও সিডিউল মেনে দেয়া হচ্ছে
না বিদ্যুৎ। এতে শিল্পোৎপাদন ব্যাহত বিপর্যস্থ হয়ে পড়ছে জনজীবন। কারণ বেশিরভাগ হালকা বা মাঝারি শিল্প শহর কেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রী এমপি ও মন্ত্রীদের অযথা গাড়ি ব্যবহার কিংবা ছোটাছুটি না করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। এমনকি অফিসিয়াল মিটিং ভার্চুয়ালি করার পরামর্শও দিয়েছেন। বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কথা এখন বলা হলেও দেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর জন্য পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণের সময় জ্বালানির যোগানের চিন্তা মাথায় রাখা হয়নি বলেও অনেক বিশেষজ্ঞও এসব প্রকল্পের সমালোচনা করছেন। এমনকি ন্যাচারাল রিসোর্সকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনাকেও নষ্ট করা হয়েছে বলে মনে করছেন তারা। একদিকে মানুষের চাহিদাকে জাগিয়ে তোলা হয়েছে,অন্যদিকে তাদের চাহিদার আলোকে সরবরাহ না করে ভোগান্তি বাড়ানো হয়েছে।
এনএনবিডি
মন্তব্য করুন