ছবি-প্রতীকী
কোন ভাবেই রিজার্ভের নি¤œমুখীতা থামানো যাচ্ছে না বরং যতই
দিন যাচ্ছে ততই পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। আমদানিতে কড়াকড়ি, কৃচ্ছ্রতা সাধন, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়
বাড়ানোর বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ ক্রমাগত বাড়ছেই। গত বছর ২৫
আগস্ট রিজার্ভের পরিমাণ যেখানে ছিল ৪৮ দশমিক ৬০
বিলিয়ন ডলার, সেটি কমতে কমতে গত বুধবার ৩৬
দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলারে
এসে ঠেকেছে। বিষয়টিকে নেতিবাচক হিসাবেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে
সম্প্রতি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত সোমবার ডলারের
পরিমাণ ছিল ৩৭ দশমিক শূন্য
৮ বিলিয়ন ডলার। আর চলতি মাসের
প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেশগুলোর জুলাই-আগস্ট সময়ের জন্য ১ দশমিক ৭৪
বিলিয়ন পরিশোধ করায় রিজার্ভ ৩৭ দশমিক ১৩
বিলিয়নে নেমে আসে। অথচ গত বছর ২৫
আগস্ট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৮ দশমিক ৬০
বিলিয়ন। সেই হিসাবে ১ বছরের ব্যবধানে
রিজার্ভ কমেছে ১১ দশমিক ৬৩
বিলিয়ন ডলার। আর এ ধারা
এখনো চলমান আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের
বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে গত জুলাই মাসের
তুলনায় আগস্টে আমদানির ক্ষেত্রে এলসি (ঋণপত্র) নিষ্পত্তি কমেছে ২৫ শতাংশ। আগস্টে
এলসি বাবদ পরিশোধ হয়েছে ৫ দশমিক ৯৩
বিলিয়ন ডলার, যা আগের মাসে
ছিল ৭ দশমিক ৪২
বিলিয়ন। আর চলতি বছরের
জানুয়ারিতে এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ৬ দশমিক ৮৫
বিলিয়ন, ফেব্রæয়ারিতে ৬ দশমিক ৫৫
বিলিয়ন, মার্চে ৭ দশমিক ৬৭
বিলিয়ন, এপ্রিলে ৬ দশমিক ৯৩
বিলিয়ন, মে মাসে ৭
দশমিক ২৫ বিলিয়ন ও
জুনে ৭ দশমিক ৭৫
বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সাধারণত কোনো দেশের ৩ মাসের আমদানি
বিল পরিশোধের জন্য রিজার্ভ থাকলে-তা আদর্শ হিসেবে
ধরা হয় উল্লেখ করে
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে ৫ মাসের বেশি
আমদানি বিল পরিশোধ করা সম্ভব। সুতরাং এই রিজার্ভ নিয়ে
শঙ্কার কিছু নেই। তবে রিজার্ভে যেভাবে ভাটির টান পড়েছে, আর আগামী দিনেও
তা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে পরিস্থিতি যেকোন মহুর্তে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এমতাবস্থায় দেশের রিজার্ভ নিরাপদ রাখতে এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে আমদানী ব্যয় হ্রাস, অপ্রয়োজনীয় আমদানী বন্ধ, সকল ক্ষেত্রেই কৃচ্ছ্রতা সাধন, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়
বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। দেশের রিজার্ভ পরিস্থিতি যাতে কোন ভাবেই অনিরাপদ না হয় সেদিকেই
সরকারকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। আর এজন্য যা
করণীয় তার সকল কিছুই করতে আমাদেরকে। অন্যথায় আগামী দিনে আমাদের অর্থনীতি নিরাপদ থাকবে না।
সৈয়দ মাসুদ মোস্তফা
মন্তব্য করুন