প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারো পারস্পরিক সুবিধার জন্য সৈয়দপুর বিমানবন্দরের পাশাপাশি মংলা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের জন্য নেপালকে প্রস্তাব দিয়েছেন। গত শুক্রবার(৫ আগষ্ট) নেপালের সফররত সংসদীয় প্রতিনিধিদল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নেপাল আমাদের মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে সুবিধা নিতে পারে।’
নেপালের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন নেপালের ফেডারেল পার্লামেন্টের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিটির চেয়ারপারসন পবিত্র নিরুওলা খারেল।
বাংলাদেশ সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তুলছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেপালসহ প্রতিবেশী দেশগুলো বিমানবন্দরটি ব্যবহার করতে পারবে।
বৈঠকে উভয় পক্ষ পারস্পরিক সুবিধার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করার পাশাপাশি দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো সুসংহত করার আগ্রহ প্রকাশ করে।
প্রতিনিধিদলের সদস্যরা অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেন যে, নেপাল ও বাংলাদেশ বিগত বছরগুলোতে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক উপভোগ করে আসছে। তারা উল্লেখ করেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদযাপনের জন্য এ বছরটি উভয় দেশের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
তারা আশা প্রকাশ করেন যে, দু’দেশ বিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ, পর্যটন, শিক্ষা, আইসিটি, সংযোগ এবং জনগণের সাথে যোগাযোগের মতো খাতে তাদের সহযোগিতা আরো সুসংহত করতে পারে। তারা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করতে নিয়মিত উচ্চ পর্যায়ের সফরের ওপর জোর দেন।
নেপালি প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংসদ সদস্য চাঁদতারা কুমারী এমপি, ড. দীপক প্রকাশ ভট্ট এমপি, দেব প্রসাদ তিমলসেনা এমপি, লীলা দেবী সিতৌলা এমপি, নারদ মুনি রানা এমপি ও সরলা কুমারী যাদব এমপি।
এই প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি ভারতের মতো চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সুবিধা চায় বংলাদেশের কাছে। দেশটি ভারতের সড়কপথ ও রেলপথ ব্যবহার করে একদিকে বাংলাদেশে সম্প্রসারণ করতে আগ্রহী পণ্যের বাজার, অপরদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে পণ্য পাঠাতে চায় ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। দেশটির উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম সফরে এসে তাদের এ আগ্রহের কথা জানিয়েছে।
এ উপলক্ষে শুক্রবার রাতে নগরীর র্যাডিসন ব্ল– চিটাগং বে ভিউ হোটেলে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এছাড়া নেপাল বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানি করতেও আগ্রহী বলে জানায় প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশস্থ নেপাল দূতাবাসের ডেপুটি চিফ ধন বাহাদুর অলিও এতে উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম বন্দরের ট্রানজিট সুবিধা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছিল নেপাল। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতায় তা মুখ থুবড়ে পড়ে। স্থলবেষ্টিত নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি জল কিংবা স্থল যোগাযোগ নেই। ভারতের রেল ও সড়কপথ ব্যবহার করে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে পণ্য পরিবহন সম্ভব এবং সীমিত পরিসরে তা হয়েও আসছে। বাংলাদেশ কৃষিজাত পণ্য, শিল্পের কাঁচামাল, রাসায়নিক উপাদান, তৈরি পোশাক, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং খাদ্য ও পানীয়সহ প্রকৌশল, প্লাস্টিক ও উৎপাদনশীল পণ্য, ওভেন গার্মেন্টস, হোমটেক্স ও চামড়াজাত পণ্য নেপালে রফতানি করে থাকে। এর মধ্যে কৃষিজাত পণ্যই বেশি রফতানি হয়।
অন্যদিক নেপাল থেকে সবজি, যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রুনিক্স পণ্য, কোমল পানীয়, তামাকজাত পণ্য এদেশে আমদানি করা হয়। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশ নেপালে এক কোটি ৭৮ লাখ ৮০ হাজার ডলারের সমপরিমাণ পণ্য রফতানি করেছে। এর বিপরীতে আমদানি করেছে ৯৪ লাখ ৩০ হাজার ডলারের সমপরিমাণ পণ্য।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে নেপালে পণ্য রফতানির পরিমাণ ছিল দুই কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানির পরিমাণ ছিল এক কোটি ২০ লাখ ৫০ হাজার ডলার। অবকাঠামো ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সীমান্ত ও বন্দরকেন্দ্রিক নানা সমস্যার কারণে নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য কমেছে।
নেপাল ভৌগোলিকভাবে ভারত ও চীনের সীমান্তঘেরা। তাদের কোনো নৌবন্দর নেই। ফলে পণ্য পরিবহনে একমাত্র ভরসা স্থলবন্দর। এ ক্ষেত্রে ভারতের ওপর নির্ভর করে থাকতে হয়। বর্তমানে নেপালের আমদানি-রফতানির একটি বড় অংশ চলছে ভারতের হলদিয়া বন্দর দিয়ে। তবে তারা ভারতের বন্দরের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে চট্টগ্রাম বন্দরের ট্রানজিট সুবিধা ব্যবহার করতে আগ্রহী।
নেপালের রাষ্ট্রদূত প্রফেসর চোপ লাল ভুষাল বলেন, বাংলাদেশে ট্রেড ও ট্রানজিট সুবিধা নিয়ে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে চায় নেপাল। আগে এ সুবিধা ছিল। এখন আবার নতুন করে গড়ে তোলার ব্যাপারে আমাদের ব্যবসায়ীরা আগ্রহী। এ ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরের সাহায্যে নেপাল বৈদেশিক বাণিজ্য পরিচালনা করতে চায়। নেপাল প্রচুর আদা, দারুচিনি, মসুর ডাল ও সবজি উৎপাদন করে। বাংলাদেশ প্রচুর ওষুধ উৎপাদন করে। এখানকার সামুদ্রিক মাছের চাহিদা আছে নেপালে। স্বাভাবিকভাবেই দ্বিপক্ষীয় আমদানি-রফতানি বাণিজ্য লাভজনক হবে। ট্রানজিটের জন্য আমাদের ভারত-বাংলাদেশ-নেপাল ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার দিকে ঝুঁকছে, এতে পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা থাকে। নেপাল প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করে পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। আমরা ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎও রফতানির অফার দিয়েছি।’
উল্লেখ্য ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশে ট্রানজিট সুবিধা পেয়েছিল নেপাল। এরপর বাংলাদেশ হয়ে নেপাল কয়েক বছর ট্রানজিট সুবিধার আওতায় পণ্য আমদানি করেছে। তবে নানা প্রতিবন্ধকতায় ’৮২ সাল থেকে তা বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্থল ও রেল যোগাযোগ উন্নত হওয়ায় এখন আবারও চট্টগ্রাম বন্দরের ট্রানজিট সুবিধা কাজে লাগাতে চান নেপালের রাষ্ট্রদূত।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পক্ষে সৈয়দ মাহমুদুল হক বলেন, নেপাল যদি চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে, তাতে বাংলাদেশ লাভবান হবে। তবে এ ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার বিষয়টিও দেখতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এমনিতেই বাংলাদেশের আমদানি-রফতানি পণ্য ঠিকমতো হ্যান্ডলিং করতে পারছে না চট্টগ্রাম বন্দর। জেটি সংকট, লাইটার জাহাজ সংকট, ইয়ার্ড সংকট, ইকুইপমেন্ট সংকটসহ নানা সংকটে পর্যুদস্ত এই বন্দর। তার ওপর ভারত কিংবা নেপালকে ট্রানজিট দিলে বা এই বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিলে তা ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে দেখা দেবে। তাই বাইরের কোনো দেশকে পুরোদমে বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দেয়ার আগে বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে হবে বলে মত দেন তারা।
ব্যবসায়ী সৈয়দ মাহমুদুল হক বলেন, ‘এক এগ্রিমেন্টে নেপাল ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশে ট্রানজিট সুবিধা পেয়েছিল। ১৯৭৯ সাল থেকে তারা চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কনজ্যুমার আইটেম ও সিমেন্ট আমদানি শুরু করে। তবে কোনো রফতানি করেনি। কিন্তু ’৮২ সালের দিকে ভারতের স্থলপথ ব্যবহার জটিলতায় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে তাদের পণ্য আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। এতে আইনগত কোনো বাধা ছিল না। ’৭৬ সালের এগ্রিমেন্টের আলোকে তারা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে পারে।’
এর আগে ২৩ মার্চ ২০২১ নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি বাংলাদেশ সফরে আসেন।বৈদেশিক বাণিজ্য সহজ করতে বাংলাদেশের তিন সমুদ্র বন্দরের (চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা) পাশাপাশি আকাশ, রেল ও নৌপথ ব্যবহারের আগ্রহ প্রকাষ করেন দেবী ভান্ডারী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ১৯৭৬ সালে সম্পাদিত নেপাল-বাংলাদেশ ট্রানজিট চুক্তির প্রটোকলের সংযোজনী হিসাবে রোহানপুর-সিংঘাবাদ রেল সংযোগ পয়েন্টকে অন্তর্ভুক্ত করে দুই দেশের বাণিজ্য সচিবদের মধ্যে একটি লেটার অব এক্সচেঞ্জ (এলওই) সই হয়েছে। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলো স্থলবেষ্টিত নেপাল ও ভুটানকে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে মোমেন বলেন, নেপাল চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর ব্যবহারে আগ্রহী। এক্ষেত্রে মডালিটিগুলো নির্ধারণের কাজ এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ নেটওয়ার্ক ব্যবহারের পাশাপাশি নেপাল সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট এবং নেপালের বিরাটগর বা ভদ্রপুরের মধ্যে সরাসরি বিমান সংযোগ স্থাপনেও আগ্রহী জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ প্রস্তাব দুটিকে স্বাগত জানিয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে স্বাক্ষরিত বিবিআইএন মোটর ভেহিকলস এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিদ্যমান রুটগুলো ছাড়াও নতুন কিছু রুট অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনাকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চুক্তিটির ত্রিদেশীয় প্যাসেঞ্জার প্রটোকল স্বাক্ষরে বাংলাদেশ ও ভারত ইতোমধ্যে সম্মত হয়েছে। এ বিষয়ে নেপালের সম্মতি খুব দ্রুত পাওয়া যাবে বলে আমরা আশা করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা নেপাল এবং ভারতের নীতিগত সম্মতি পেয়েছি। সত্যিকার অর্থে ইন্সট্রুমেন্টটা স্বাক্ষর করার জন্য তারা প্রস্তুত আছেন। কিন্তু ভুটানের পার্লামেন্ট এটাকে এখনো অনুমোদন করেনি। এ কারণে আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে তিনটি দেশের মধ্যে এটা নিয়ে কাজ করছি, ভুটান পরেও যোগ দিতে পারে।
এ সময় নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষরের বিষয়টি বর্তমানে চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি সই হলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। আমরা আশা করছি, চুক্তিটি দ্রুত সই হবে। নেপালের রাষ্ট্রপতি ভান্ডারি নেপালে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ আমদানির জন্য বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান মোমেন।
তিনি বলেন, জলবিদ্যুতের ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্র্রসারণের লক্ষ্যে ২০১৮ সালে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারকের আওতায় সচিব পর্যায়ের স্টিয়ারিং কমিটি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ বিষয়ক কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উভয় পক্ষ ভবিষ্যতে জলবিদ্যুৎ খাতে বর্ধিত সহযোগিতার আশাবাদ জানিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বাংলাদেশকে সমগ্র দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গেইটওয়ে তথা মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটি হাবে রূপান্তরিত করতে চায় সরকার। এজন্য ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তঃসীমান্ত পরিবহণ-সংযোগ অবারিত ও সুগম করার নানাবিধ উদ্যোগ চলমান রয়েছে।
বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর বাংলাদেশের সর্ব উত্তরে পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ১নং বাংলাবান্ধা ইউনিয়নে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র স্থল বন্দর যার মাধ্যমে চারটি দেশের (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভূটান)মধ্যে পণ্য আদান-প্রদানের সুবিধা রয়েছে।এখানে বাংলাশে খেকে নেপাল সীমান্তের দূরত্ব মাত্র ২২ কিলোমিটার । তবে সড়ক পথে বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর থেকে নেপালের কাকরভিটা স্থলবন্দর সীমান্তের দুরত্ব কয়েক কিলোমিটার বেশি।
১৯৯৭ সালের ১লা সেপ্টেম্বর স্থল বন্দরটি প্রথম খুলে দেওয়া হয়। নেপালের সাথে বাংলাদেশের এক বাণিজ্য চুক্তির আওতায় পণ্য আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে বন্দরটি প্রথম যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে ভারতের সাথে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির আওতায় ভারতের সাথেও বাংলাদেশের এ বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়। এ বন্দর ব্যবহার করে নেপালে বাংলাদেশ থেকে ব্যাটারী, সীসা, পাট, ফলের রস, ওয়েস্ট কটন, কাপড়, কাঠ ও প্লাস্টিকের আসবাপপত্র রপ্তানি করা হয়। এছাড়াও ভারত থেকে প্রতিদিন গড়ে ১,০০০ মেট্রিক টন পাথর ও নেপাল থেকে গড়ে প্রতিদিন ১০০ মেট্রিক টন ডাল আমদানি করা হয়।
এসব তথ্য উপাত্ব বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়,নেপাল যদি বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর স্থলবন্দর ও বিমানবন্দর ব্যবহার করে তাদের আমদানি-রফতানি বাড়াতে পারে তাহলে সবারই লাভ।বাংলাদেশ পাবে বিপুল পরিমান রাজস্ব।নেপাল একটি ল্যান্ড লক দেশ । যার সাথে সরাসরি কোন সমুদ্র যোগাযোগ নেই।দেশটির উত্তরে হিমালয় পর্বতবেষ্টিত বরফাচ্ছাদিত চীন,বাকি তিনদিকেই ভারত।ফলে তারা ভারতের হলদিয়া বন্দর ব্যবহার করে পন্য আমদানি-রফতানি করে ।আর এটা নির্ভর করে ভারতের মরজির উপর। কারণ ভারতের উপর দিয়ে তাদের পন্য পরিবহন করতে হয়। ভারত যেসব পন্য নেপালে রফতানি করে তা ইচ্ছা করলেও নেপাল তা অন্য দেশ থেকে আমদানি করতে পারেনা।
বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ,স্থলবন্দর ব্যবহার করে তারা পন্য আমদানি রফতানি করতে চাইলে সেক্ষেত্রে ভারতের মনোভাব মোটেও ভাল নয়।তাদের স্বার্থ এর বাইরে কোন কিছুই করতে দেয়না।অতিত রেকর্ড ভাল নয়।
মন্তব্য করুন