• , |
  • ঢাকা, বাংলাদেশ ।
সর্বশেষ নিউজ
* রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত * ভারতে প্রথম ধাপের লোকসভা নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ * অতিবৃষ্টিতে দুবাই বিমানবন্দরে এখনো অচলাবস্থা * ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে : ডাঃ শফিকুর রহমান * ইসরাইল কি আবারো হামলার পরিকল্পনা করছে! * বিএনপির হাল ধরার কেউ নেই : ওবায়দুল কাদের * ১১ ম্যাচ নিষিদ্ধ আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক * ‘ভারত বাংলাদেশের বন্ধু, এটা যারা বলে তাদের মানসিক সমস্যা’ * তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্কে বিশ্ববাসি * সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি

দেশের গর্ব হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিম

news-details

ছবি : সংগৃহীত


যে সময়ে গোটা বাংলাদেশ মাতছে নেপালে শেষ হওয়া সাফ নারী ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের নিয়ে ঠিক একই সময়ে দেশের জন্য বড় সম্মান বয়ে এনেছে হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিম।সৌদি আরবের পবিত্র মক্কায় অনুষ্ঠিত ‘৪২তম বাদশাহ আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা’য় তৃতীয় স্থান অর্জন করেন তাকরিম।

৫টি শাখায় ১১১টি দেশের ১৫৩ জন প্রতিযোগী অংশ নেন এই প্রতিযোগিতায়। প্রতিটি শাখায় ৩ জন করে মোট ১৫ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এরমধ্যে তাকরিম চতুর্থ শাখায় (শুদ্ধ উচ্চারণসহ ১৫ পারা কোরআন মুখস্ত) তৃতীয় হন ।পুরস্কার হিসেবে তাকরিম পেয়েছেন এক লাখ রিয়াল বা প্রায় সাড়ে ২৭ লাখ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে তাকরিমকে বহনকারী উড়োজাহাজ রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় তাকে শুভেচ্ছা জানাতে হাজারো মানুষ বিমানবন্দরে সমবেত হন। এছাড়া ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় ধর্ম মন্ত্রণালয়।  

এদিকে রাত ৩টার দিকে যখন বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসেন তাকরিম, তখন শুভেচ্ছা আর শ্লোগানে মুখরিত হয় চারপাশ। পরে শোভাযাত্রার মাধ্যমে তাকে বিমানবন্দর থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।

তাকরিমকে শিগগিরই বড় পরিসরে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। বিশ্বের ১১১টি দেশের প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে তৃতীয় হয়েছেন তাকরিম।

৪২তম বাদশাহ আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তার উপদেষ্টা ও মক্কা নগরীর গভর্নর খালেদ আল ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ, দেশটির ইসলাম ও দাওয়াহ বিষয়ক মন্ত্রী ড. আবদুল লতিফ বিন আবদুল আজিজ আলে শেখ প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানার ভাদ্রা গ্রামের হাফেজ আব্দুর রহমানের ছেলে সালেহ আহমাদ তাকরিম। সে রাজধানীর ‘মারকাযু ফয়জিল কোরআন আল ইসলামী মাদরাসা’র কিতাব বিভাগের শিক্ষার্থী।

এর আগে গত মার্চে ইরানে আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিলেন সালেহ আহমাদ তাকরিম।

হাফেজ তাকরিমের আগমন উপলক্ষে গভীর রাত সত্ত্বেও তাকে বরণ করে নিতে অনেক মানুষকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ সক্রিয় দেয়া যায়। সরাসরি লাইভে এসে কিংবা তাকরিমের অভ্যর্থনার ছবি-ভিডিও পোস্ট করে অনলাইনে সক্রিয়রাও উষ্ণ সংবর্ধনা জানান তাকে।

শুধু তাই নয়;  বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা ও ভালোবাসাও ছিল চোখে পড়ার মতো। হাফেজ তাকরিমের শিক্ষক ও সৌদিতে তার সফরসঙ্গী হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন ফেসবুকে একটি সংক্ষিপ্ত পোস্টে সেটিই উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘ভিআইপি লাউঞ্জে সকল কর্মকর্তাদের ভালোবাসায় সিক্ত’।

এর আগে তাকরিমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান‘মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী মাদরাসা’র সিনিয়র শিক্ষক হাফেজ মাওলানা হোসাইন রাহমানী জানান, অভ্যর্থনায় শুধুমাত্র মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও নির্দিষ্ট কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষী উপস্থিত থাকবেন। গভীর রাত হওয়ায় মাদরাসার পক্ষ থেকে তিনি সাধারণ শুভাকাঙ্ক্ষীদের বিমানবন্দরে উপস্থিতিকে নিরুৎসাহিত করেন। কিন্তু এরপরও মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসায় মুগ্ধ হয় তাকরিম। বিশ্বজয়ী এ হাফেজকে এক নজর দেখতে বিমানবন্দরে ভিড় জমান অসংখ্য মানুষ।

 বড় রকমের সংবর্ধনার ব্যাপারে তাকরিমের শিক্ষক মাওলানা হোসাইন রাহমানী বলেন, ‘বিশ্বজয়ী এ হাফেজকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতে বহু কুরআনপ্রেমী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান আমাদের সাথে নানাভাবে যোগাযোগ করেছেন। আমরা তাদের আবেগকে পূর্ণ শ্রদ্ধা করি। এজন্য তাদের সংবর্ধনা প্রদানের জন্য ‘মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী মাদরাসা আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আমরা ওই অনুষ্ঠানের সফলতার জন্য সকলের কাছে দোয়া চাই।

বিশ্বের ১১১ টি দেশের কুরআনে হাফেজদের মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় তাকরিমের এই সফলতার জন্য পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে তেমন কোন সম্মান এখনো দেখায়নি যতটা দেখিয়েছে সাফ ফুটবলজয়ী মেয়েদের।অথচ মেয়েরা বিজয়ী হয়েছে ৭টি দেশের প্রতিযোগিতায় আর হাফেজ তাকরিম বিজয়ী হয়েছে ১১১টি দেশের মধ্যে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন হাফেজ তাকরিমকে সংবর্ধনা দেবে বলে জানিয়েছে।তবে আমরা আশা করব মহামান্য রাষ্ট্রপতি অথবা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্বজয়ী এই কুরআনের পাখিকে বরণ করে নেবেন ,সম্মানিত করবেন। তাহলে অন্যান্য হাফেজরাও উৎসাহিত হবে এবং পবিত্র কুরআনের মর্যাদা বাড়বে।সেইসাথে মুসলিম বিশ্ব জানবে যে,বাংলাদেশ কুরআনে হাফেজদের মর্যাদা দিতে জানে।


শহীদুল ইসলাম

মন্তব্য করুন