ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে ‘মিনি গেস্টরুমে’ ডেকে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে হলের তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত ছাত্রলীগের চার কর্মীর বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাত ১০টায় বঙ্গবন্ধু হলের ২০১ (ক) নং রুমে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ভয়ে হল ছেড়েছেন।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু হলের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের আবু তালিব নামের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন একই হলের তৃতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা হলেন সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শেখ শান্ত আলম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ইমদাদুল হক বাঁধন, তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থগার বিভাগের শাহাবুদ্দিন ইসলাম বিজয়, আইন বিভাগের নাহিদুল ইসলাম ফাগুন।
অভিযুক্তরা বঙ্গবন্ধু হলের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান শান্তর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
নির্যাতনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তালেবের মুখে জোরপূর্বক সিগারেট জালিয়ে দিয়ে তা হাত দিয়ে ধরা ছাড়া, মুখ থেকে নামানো ছাড়া, মুখ দিয়ে ধোঁয়া না ছেড়ে পুরো সিগারেট খেতে বলেন শান্ত ও বাঁধন। ছেলেটির হাত পেছনের দিকে রাখতে বাধ্য করা হয়। জ্বলন্ত সিগারেট মুখে আর তার সব ধোঁয়া নাক দিয়ে যাচ্ছিল। তিনি কান্না করছিলেন দেখে বাঁধন তাচ্ছিল্য করে বলেন, ‘কান্দস ক্যান, তুই কি মেয়ে নাকি?’ এভাবে সিগারেটের দুই-তৃতীয়াংশের ধোঁয়া নিতে বাধ্য করার পর একপর্যায়ে বাঁধন বলে ওঠে, ‘এই তুই তো মরে যাবি।’
সূত্র আরো জানায়, পরীক্ষার কারণে ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে উপস্থিত না থাকার অভিযোগে ১০-১২ জন শিক্ষার্থীকে ৩০১ (ক) থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য (পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত) রুম তালাবদ্ধ করে রাখা হয়।
বঙ্গবন্ধু হলের তৃতীয় বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, অভিযুক্তরা গেস্টরুমে সব সময় শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করেন। বাবা-মা তুলে গালি দেন। শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন।
অভিযোগের বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ মো. আকরাম হোসেন বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। দায়িত্বরত শিক্ষকদের খোঁজ নিতেও বলেছেন। অভিযোগের তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।