বিভিন্ন অভিযোগে মালয়েশিয়ায় বৃটিশ গৃহস্থালি বিষয়ক কোম্পানি ডাইসনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ ও নেপালের একদল অভিবাসী শ্রমিক। এরমধ্যে জোরপূর্বক শ্রমে নিযুক্ত করা, অস্বাস্থ্যকর বাসস্থান, কর্মক্ষেত্রে বিপজ্জনক পরিবেশসহ আরো বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে কোম্পানির বিরুদ্ধে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন জুরিস্ট।
খবরে বলা হয়েছে, শ্রমিকেরা আগে মালয়েশিয়ায় বড় একটি ইলেকট্রনিক্স প্রস্তুতকারক কোম্পানি এটিএ ইন্ডাস্ট্রিয়ালে কাজ করতেন। এই প্রতিষ্ঠান থেকে ডাইসনের জন্য ভ্যাকুয়াম এবং বাতাস বিশুদ্ধকরণ যন্ত্রাংশ সরবরাহ দেয়া হয়। বাদিরা এই কোম্পানির বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডে আইনি পদক্ষেপ শুরু করেছেন।
শ্রমিকদের অভিযোগের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করছে বৃটিশ আইনি প্রতিষ্ঠান লেই ডে। তারা বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে ডাইসনের বিরুদ্ধে বাদিদের অভিযোগ ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া সম্পর্কে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
এটিএ কারখানায় নাজুক বসবাস ও কর্মপরিস্থিতি নিয়ে প্রথম হুইসেলব্লোয়ার ছিলেন অ্যান্ডি হল। তিনি ২০১৯ সালের নভেম্বরে এ বিষয়ে ডাইসনের কাছে রিপোর্ট করেন।
২০১৯ সালে হুইসেলব্লোয়ার অ্যান্ডি হলের রিপোর্টের জবাবে ডাইসন বলেছে, ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে ওই কারখানায় ৬বার তারা সামাজিক অডিট করেছে। তার চূড়ান্ত রিপোর্টে জোরপূর্বক শ্রমের বড় রকমের ঝুঁকির কথা তুলে ধরা হয়। ২০২১ সালের নভেম্বরে ডাইসন তার রিপোর্টে বলে যে, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ উন্নত করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে তারা এটিএ ইন্ডাস্ট্রিয়ালের সঙ্গে সব চুক্তি বাতিল করেছে।
বাদিদের পক্ষে ডাইসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে তাদেরকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে লেই ডে। তাতে বলা হয়েছে, বাদিদের যদি ক্ষতিপূরণ না দেয় কোম্পানি তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে বৃটিশ হাইকোর্টে মামলা করা হবে।
বাদিরা অভিযোগ করেছেন, এটিএ’তে রিক্রুটমেন্ট ফি পরিশোধ করেছেন তারা। কিন্তু তাদেরকে সর্বনিম্ন বেতনের চেয়েও কম বেতন দেয়া হয়েছে। তাদের আরো অভিযোগ, এটিএ তাদের পাসপোর্ট নিয়ে নিয়েছে। কিছু শ্রমিকের ওয়ার্ক ভিসা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তাদেরকে বানানো হয়েছে অবৈধ শ্রমিক।
বাদিদের আরো অভিযোগ, বহু শ্রমিক বসবাস করেন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে, গাদাগাদি করে। তাদের চলাফেরা মনিটরিং করা হতো এবং এক্ষেত্রে থাকতো বিধিনিষেধ। তারা ওভারটাইম করতেন। এতে ১৮ ঘন্টা কাজ করতে হতো তাদের। এর ফলে অনুমোদিত ১২ ঘন্টার বেশি কাজ করেছেন তারা। কিন্তু বার্ষিক ছুটি পর্যন্ত দেয়া হতো না।
বাদিরা তাদের আইনি অভিযোগে আরো বলেছেন, ওই কারখানায় বেআইনিভাবে, শ্রমিকদের বিপথগামী করে এবং বিপজ্জনক পরিবেশে কাজ করিয়ে তার ফল ভোগ করেছে ডাইসন।
অভিযোগের জবাবে ডাইসনের মুখপাত্র বলেছেন, এসব শ্রমিক ছিলেন এটিএ’র কর্মী, ডাইসনের নন। কোম্পানির বিরুদ্ধে যেকোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়া হলে তার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে ডাইসন।